কালিয়াকৈরে পুলিশের উপস্থিতিতে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিলেন স্বামী


 

স্টাফ রিপোর্টার# 


গাজীপুরের কালিয়াকৈরে স্বামীর অধিকারের পাওয়ার দাবীতে বৃহস্পতিবার সকালে অনশনরত ১ম স্ত্রীকে মারধর ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তার অ্যান্ডুয়েট মোবাইল ফোন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে তাড়িয়ে দিলেন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।

স্বামীর অধিকার বঞ্চিত ওই নারী কালিয়াকৈর উপজেলার উত্তর হিজলতলী এলাকার আক্কাছ আলী মোল্লার মেয়ে খাদিজা আক্তার মনিকা (১৯)। 

এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ বছর আগে আক্কাছ আলী মোল্লা তার উপজেলার উত্তর হিজলতলী এলাকার বাড়িটি বিক্রি করে দেন। পরে তিনি তার স্ত্রী ও কন্যা মনিকাকে নিয়ে পাশের নয়ানগর এলাকার আব্দুল কাদেরের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। এ সুযোগে তার সঙ্গে বাড়িওয়ালার ছেলে জুয়েল রানার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দুই বছরের প্রেম ও শারীরিক সর্ম্পকের পর তারা দুজনে ২০২২ সালের ১১ জুন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় একটি কাজী অফিসে ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। যার বই নং ০২ ও পৃষ্ঠা নং ৭৬। এর পূর্বে গত ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর গাজীপুর আদালতে তারা দুজনে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারিজ করেন। এরপর ওই নারী ও তার বাবার বাড়ির লোকজন ঢাকার মিরপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু  গত চার মাস আগে ১ম স্ত্রীর বিষয়টি গোপন রেখে তার পরিবারের লোকজন জুয়েলকে আবার ২য় বারের মতো বাল্য বিবাহ করান। বিষয়টি জানতে পেরে ১ম স্ত্রী মনিকা স্বামীর অধিকারের দাবীতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নয়ানগর তার শশুরবাড়িতে অনশনে বসেন। কিন্তু তার শশুর-শাশুরী, সতীন ও ননদ মিলে তাকে কাঠের খন্ড দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে। এক পর্যায় তিনি ৯৯৯-এ ফোন দিলেও পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাননি। খবর পেয়ে তার ভাসুর সোহেল রানা বাড়িতে এসে তাকে মারধর ও টানাহেচড়াসহ শ্লীলতাহানী করে। এসময় ধারণকৃত স্বামী-স্ত্রী ও মারধরের প্রমাণ নষ্ট করার জন্য তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানার এসআই হাফিজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলেও তার ফোনটি উদ্ধার করে দেয়নি। উল্টো পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে শশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। 

১ম স্ত্রী খাদিজা আক্তার মনিকা জানান, আমার স্বামী গোপনে ২য় বিয়ে করেছেন। এমন খবর পেয়ে স্বামীর অধিকারের দাবীতে শশুরবাড়ি আসি। পরে শশুরবাড়ির লোকজন আমাকে মারধর করে। ৯৯৯-এ ফোন দিলেও কোনো সহযোগীতা পাইনি। এরপর আমার ভাসুর সোহেল এসে আমাকে আবারো মারধর এবং টানাহেচড়াসহ শ্লীলতাহানী করে। পরে পুলিশ আসলেও তাদের উপস্থিতিতে শশুরবাড়ির লোকজন আমাকে বের করে দেয়। এসময়  থানায় একটি জিডি ও কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিয়ে চলে যেতে বলেন ওই পুলিশ। পরে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী জুয়েল রানা কোনো কিছু বলতে রাজি হননি। তবে জুয়েলের  বাবা আব্দুল কাদের রেগে গিয়ে বলেন, আমার পোলার ২/৩টা বউ লাগেই। তিনি আরো বলেন সময় থাকলে আমিও আরো ২/৩টা বিয়ে করতাম। তবে তাকে মারধর করা হয়নি। জুয়েলের বড় ভাই সোহেল রানা জানান, তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানী করা হয়নি।

কালিয়াকৈর থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ওই নারী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পরে তাকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে থানায় জিডি ও কোর্টে মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া শশুরবাড়ির লোকজনকে ওই নারীর মোবাইল ফোনটি থানায় দিয়ে আসতে বলা হয়েছে। 


إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم