আটঘরিয়ায় আমন চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকরা


পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি #


পাবনার আটঘরিয়ায় চলতি মৌসুমে আষাঢ় মাসে ঠিক তেমন একটা বৃষ্টির দেখা মেলেনি। প্রচণ্ড খরা পার করে শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে আবহাওয়া কিছুটা অনুকুলে এসেছে। কয়েকদিন বৃষ্টির পানি পেয়েই খরিপ-২ মৌসুমে রোপা আমনের বিভিন্ন জাতের ধান গাছের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আটঘরিয়ার কৃষকরা।

সরেজমিন আটঘরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক কৃষক মহিষ ও হ্যারো দিয়ে জমি চাষ করা শুরু করেছেন। কেউ জমি প্রস্তুত করতে, কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলতে আবার কেউ ভাটিয়ালি গানের সুরে সুরে জমিতে চারা রোপণ করতে কৃষকদের কর্মচাঞ্চল্যের এমন চিত্র দেখা গেছে।


দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা চুক্তি ভিত্তিতে এসেও কাজ করছেন। বিঘা প্রতি জমিতে ধানের চারা বপণের কাজে তাদের মজুরি মেলে এক হাজার ৭০০-৮০০ টাকা। এভাবে এক একটি গ্রুপে ১০-১৫ জন করে শ্রমিক একসঙ্গে কামলা দিয়ে কাজ করছেন।


চাঁদভা ইউনিয়নের গ্রামের বাসিন্দা রিকাত মোল্লা নামে এক কৃষক জানান, আমাদের গোটা গ্রাম গভির নলকুপের পানি জমিতে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছরের আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে আমরা দল বেঁধে ধান লাগাই। সারাদিনে চার থেকে পাঁচ বিঘা জমিতে ধান বপন করা সম্ভব হয়। জমি থেকে ধানের চারা তুলে বপন করে বিঘা প্রতি মজুরি পাই ১হাজার ৭শ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল-মারুফ জানান, আটঘরিয়া পৌর এলাকাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চলতি বছর রোপা আমন জাতের ধান আবাদ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে আট হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। শ্রাবণের শুরুতে এ জাতের ধান রোপণের ভরা মৌসুম।

তিনি আরও জানান, উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে জমি চাষের উপযোগী করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এখানে রোপা আমনের ব্রি-ধান জাতের আবাদ করেন এ এলাকার কৃষকরা। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা ধান গাছের রোগবালাই কম হলে এবারে বাম্পার ফলন ঘরে তুলবেন কৃষকরা।


একটি পৌরসভা এবং উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন কর্মসুচিতে ১২শ প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে রোপা আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকদের দেওয়া ধানের জাতগুলো হচ্ছে-আমন ব্রি-ধাণ-৭১,৭৫,৩৯,৪৯,৮৭, ৭,১৭। এসব আধুনিক আমন ধান চাষ করে সেচ ছাড়া ও কম সার ব্যবহার করে বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব।


এছাড়া কৃষকদের পরামর্শ দিতে আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আর সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে বিঘা প্রতি ৩০-৩৫ মন পর্যন্ত ধানের ফলন পাওয়া সম্ভব বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم